রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

মাঠের ভেজা ধান আর কৃষকের চোখের জল মিশে একাকার

মাঠের ভেজা ধান আর কৃষকের চোখের জল মিশে একাকার

যশোরের চৌগাছায় বৃষ্টিতে জমির পাকা ধান ভাসছে। এতে মহাবিপাকে পড়েছেন চাষী। বোরো ধান ঘরে তুলতে এক প্রকার নাজেহাল হচ্ছেন কৃষকরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে উপজেলার হাজার হাজার হেক্টর ধান ক্ষেতে পানি জমে গেছে। তাই ধান কেটে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। দিন-রাত পরিশ্রম করে কৃষকেরা সোনালী বোরো ধান ফলিয়েছেন। সে ধান ঘরে তুলতে গিয়ে বৃষ্টির পানি গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে পৌরসভাসহ ১১টি ইউনিয়নে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার আট শ’ ২০ হেক্টর। যার সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক লাখ ছয় হাজার নয় শ’ ২০ মেট্রিক টন। কিন্তু ফলন ভালো হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে উৎপাদন লক্ষমাত্রা কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষি বিভাগ। ধান কাটার ভরা মৌসুমে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি, আর প্রবল বজ্রপাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে উপজেলার কৃষকরা। একদিকে করোনাভাইরাস, অন্যদিকে বজ্রপাত আতঙ্কে ধান কাটার শ্রমিকের মহাসঙ্কট দেখা দিয়েছে। কৃষকের সোনালী স্বপ্ন বোরো ধান বাড়ি গোলায় তুলতে পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরও নিদারুণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কৃষকের চোখের সামনেই পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রক্তপানি করে ফলানো ধান। ফলে কৃষকের আর্তনাদে ভারী হচ্ছে বাতাস। তাদের চোখে-মুখে ও আঁধার জেকে বসেছে। বুকে জমছে ফসল হারানোর চাপা কান্না।

শনিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষেতের কাটা-ভেজা ধানের শীষ জড়িয়ে ধরে কৃষক কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এ সময় কথা হয় ধান চাষী উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামর হোসেন আলী, আবু সালাম, রিজাউল ইসলাম, জাকির হোসেন, আবু তালেবসহ কয়েকজনের সাথে।

তারা জানান, উৎপাদন খরচ বাদে বৃষ্টির কারণে এক বিঘা জমির ধান ঘরে তুলতে অতিরিক্ত ৪/৫ হাজার টাকা খরচ হবে। মণপ্রতি এক হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি করতে না পারলে কৃষকের লোকসান হবে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকারের ন্যায্য মুল্যে ধান ক্রয়ের দাবিও করেন তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন বলেন, আমরা কৃষকদের আগে থেকেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছি। উপজেলার বেশিরভাগ কৃষকই পশু খাদ্যের জন্য পাকা ধানের শুকনো খড়সহ ধান সংগ্রহ করে থাকেন। বৈরি আবহাওয়ার কারণে এ বছরে খড় বাদেই ধান কেটে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877